ব্রেকিং নিউজ
মাদারীপুরে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি চাল ও কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

মাদারীপুরে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি চাল ও কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের গোপালগঞ্জ এলাকায় ‘‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি চাল ও কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রতি ৩০ কেজি চাল সরকারের নির্ধারিত ৩’শ টাকার স্থানে ৩২০-৩৫০ টাকা নিচ্ছেন ডিলার। এছাড়াও বদরপাশা ইউপি চেয়ারম্যানকে দুই হাজার টাকা না দিতে পারায় প্রতিবন্ধীর কার্ড বাতিল করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নে ৭৪০ জন অসহায় গরিব খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকার চালের কার্ড দেয়া ছিল। নতুন করে কার্ডগুলো সংশোধন করা হলে সেখানে প্রায় অর্ধেকের বেশি কার্ডধারীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে পুনরায় কার্ড নবায়ন করার অভিযোগ উঠে।

এর মধ্যে এই ইউনিয়নের গোপালগঞ্জ গ্রামের পালপাড়ার নিমু পালের কাছ থেকে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকার চালের কার্ডটি নবায়ন করার জন্য ২ হাজার টাকা দাবি করে’ তিনি দিতে অস্বীকার করায় তার কার্ড নবায়ন না করে’ পুরোনো কার্ডটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিমু পাল।

নিমু পালের পা না থাকায় অনেক কষ্টে বিভিন্ন উপায়ে উপার্জন করে সংসার চালান। এর মধ্যে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল পেয়ে অনেক বড় উপকার হয়েছিল। গত মঙ্গলবার সকালে ডিলার জিন্না সিপাহী সরকার নির্ধারিত ১০ টাকা কেজি দরের চাল ৩০ কেজি ৩’শ টাকার স্থানে ৩৫০ টাকা করে নেন। পরে উপস্থিত অনেকেই বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভ করলে ৩২০ টাকা করে বিক্রি করেন। তবে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ইউএনও’র অনুমোদন ছাড়াই কার্ড পরিবর্তন করে ডিলারকে চাল বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন চেয়ারম্যান সাবিনা আক্তার বলে অভিযোগ করেছেন ইউপি মেম্বাররা।

নিমু পাল বলেন, ১০ টাকার চালের কার্ডটি নতুন করে দেয়ার জন্য ২ হাজার টাকা দাবি করে’ আমি দিতে অস্বীকার করায় আমারে কার্ড না দিয়ে পুরোনো কার্ডটি বাতিল করে দিয়েছে। অনেক কষ্টে বিভিন্ন উপায়ে উপার্জন করে আমার সংসার চালাতে হয়। ১০ টাকার চাল পেয়ে অনেক বড় উপকার হয়েছিল। পুরান কার্ড ছিল চাল পেতাম, কিন্তু এখন আর পাবো না।

রফিক মাতুব্বর নামে একজন জানান, ১০ টাকার চালের ৩০ কেজি চালের দাম ৩শ টাকা, তবে ডিলার ৩০ কেজি চাল ৩৫০ টাকা নিচ্ছে। আমি এলাকার সচেতন মানুষ হিসেবে বিষয়টি মোবাইলে ভিডিও করি’ এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করি। সেখানে গিয়ে আরও জানতে পারি চেয়ারম্যান দুদিনের মধ্যে পুরোনো কার্ডগুলো পরিবর্তন করে ২ হাজার টাকা করে নিয়ে চালের কার্ড নবায়ন করেছে।

বদরপাশা ইউনিয়নের চালের ডিলার জেন্না সিপাহী বলেন, আমার লাইসেন্স করতে টাকা লাগছে, সিল মারতে টাকা লাগছে ২ হাজার, কম্পিউটার দোকানে টাকা লাগছে এছাড়াও আরও খরচ আছে । তাই সবাইকে বলে আমি ৫০ টাকা আবার কারও কাছ থেকে ২০ টাকা বেশি নিয়েছি। এতে আমার লাইসেন্স বাতিল হলে কিছু করার নাই।

বদরপাশা ইউনিয়ন পরিষদের নয়ানগর গ্রামের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার মাহবুব হাওলাদার বলেন, ১০ টাকা কেজি খাদ্য বান্ধব চাল যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ইউএনও স্যার, তার অনুমতি ছাড়াই চেয়ারম্যান কার্ড পরিবর্তন করে চাল বিতরণ করার জন্য অনুমতি দিয়েছে।

তা ছাড়া আমাদের না জানিয়ে কার্ড নবায়ন করা হয়েছে। ১০

টাকার চালের কার্ড নতুন করে দেয়ার জন্য কার্ডধারীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়েছে। এই বিষয়গুলো আমরা লিখিত অভিযোগ দেব।

বদরপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাবিনা আক্তার (মিরু) মুঠোফোনে জানান, মেম্বাররা যা বলে সবই ভুয়া? আমাদের শত্রু-মিত্র থাকে। মেম্বাররা এগুলো করবেই এটা কিছু না। তা ছাড়া কম্পিউটারে নতুন করে তার নাম দেয়া হবে’’ আমি ফুড অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি।

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, অভিযোগ তদন্ত করে সত্য হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

---------