ব্রেকিং নিউজ
জমিও নেই, ঘরও নেই, খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বৃদ্ধা ছলেহার বসবাস

জমিও নেই, ঘরও নেই, খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে বৃদ্ধা ছলেহার বসবাস

মোর কোন জমিও নাই, ঘরও নাই, থাকার মত কোন স্থান নেই। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কোন মতে অন্যের জমিতে পলিথিন দিয়ে খুপড়ি ঘর বানিয়ে থাকি। রাতে ঘুমাতে পারিনা, কারন বৃষ্টির দিনে ছিদ্র চালা দিয়ে ঘরের কাতা-বালিশসহ সব কিছু ভিজে যায় পানিতে আর শীতের দিনে প্রচন্ড শীত ঢোকে ঘরের ভেতরে। ঝর হলে এ ঘরে থাকতে পারিনা, উলোটপালট করে দিয়ে যায় সব। তহন মোগো আশ্রায় নিতে হয় কোন সাইক্লোন সেন্টারে। এ রকম নানামুখি সমস্যা নিয়ে চোখের জ্বল ফেলে কথাগুলো বললেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার গোপালপুর এলাকার পশ্চিম পুয়ালী গ্রামের অসহায় বৃদ্ধা ছলেহা বেগম-(৬০)। তিনি আরো বলেন, মোর স্বামী রহমান হাওলাদার বয়সের ভারে চলাফেরা করতে কষ্ট হয়। সে কোন কাজকর্মও করতে পারেনা। মোর চারটি মেয়ে, কোন ছেলে নাই। স্বামীর যা ছিল সব বিক্রি করে বহু কষ্টে তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে, এখন তারা যে যার মত করে স্বামীর সঙ্গে আছে। ছোট মেয়ে সাথী পঞ্চম শ্রেনীতে লেখাপড়া করে কিন্তু অর্থের অভাবে তারে আর পড়াতে পারছিনা। অনেক সময় না খেয়ে থেকে দিন চলে যায়। একদিকে খেতেও পারিনা অন্যদিকে মাথার গোজার ঠাইও নাই। রোদ,বৃষ্টি, ঝড়, শীত সবই মোর আর মোর পরিবারে মাথার উপর দিয়া যায়। হের পরও মোর ভাগ্যে আজ পর্যন্ত একখানা ঘর জুটলোনা। মুই এহন পরিবার লইয়া কই যাইমু। শেখের বিটি হাসিনা যদি দয়া করে মোরে একখান ঘর দিত তাহলে মোদের একটু মাথা গোজার ঠাই হত।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে যানাগেছে, ২০০৭ইং সালের প্রলংকারী ঘুর্নিঝড় সিডরে বৃদ্ধ ছলেহা বেগমের স্বামীর একমাত্র সম্বল দুই চালা টিনের বসত ঘরটি উড়িয়ে নিয়ে যায়। এতে কওে সালেহা পরিবার নিয়ে থাকার জন্য কোন স্থান ছিলনা। এরপর থেকে ছলেহা বেগমকে পার্শবর্তী দক্ষিন গোপালপুর গ্রামের রহিম কাজী অস্থায়ীভাবে তার পরিত্যক্ত একটি ভিটায় থাকার জন্য জায়গা দেন। পরে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কিছু টিন ও পলিথিন সংগ্রহ করে সেখানে ছলেহা বেগম ছোট একটি এক চালা খুপড়ি ঘর বানিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বসবাস করে আসছেন। এরপর ছলেহা বেগম এলাকার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন জনের কাছে বছরের পর বছর ধর্না দিয়েও একটি ঘর তার কপালে জোটেনি। বর্তমানে তিনি তার পরিবার নিয়ে একটি ঘরের অভাবে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
বৃদ্ধা ছলেহা বেগম বলেন, এই দুনিয়াতে কার খবর কেডা রাহে একখান ঘরের জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বারের কাছে অনেকবার গিয়েও আজ পর্যন্ত পাইনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার শেষ দাবি তিনি একখান ঘর মোরে দিলে পরিবার নিয়ে সুখে থাকতে পারতাম। আর তা না হলে কবরে গিয়েও শান্তি পামুনা।
গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ মাতুব্বর বলেন, ভুলক্রমে তার নামটা ঘরের তালিকায় যায়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন, বৃদ্ধা সালেহার নাম তালিকায় উঠে না থাকলেও তাকে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।

---------